ফার্মেসি সাবজেক্ট রিভিউ
কোর্সসমূহঃ
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় স্নাতক পর্যায়ে চার বছরের বি. ফার্ম কোর্স চালু আছে। সম্প্রতি ফার্ম ডি. নামের পাঁচ বছরের কোর্স ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়েছে। চার বছরের বি. ফার্ম কোর্সের সঙ্গে সিলেবাসে অনেক সাদৃশ্য থাকলেও পাঁচ বছরের ফার্ম ডি. কোর্সে ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও হসপিটাল ফার্মেসির ওপর জোর দেওয়া হয়। বি. ফার্ম অথবা ফার্ম ডি. ডিগ্রি নেওয়ার পর এম. ফার্ম করা যায়।
কি পড়তে হবে ফার্মেসি তেঃ
ফার্মেসি মুলত রসায়ন ও বায়োলজিক্যাল বেইসড সাবজেক্ট।
- অর্গানিক কেমিস্ট্রি
- ইন অর্গানিক কেমিস্ট্রি
- ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি
- বায়োকেমিস্ট্রি
- মেডিসিনাল কেমিস্ট্রি
- হিউম্যান এনাটমি
- হিউম্যান ফিজিওলজি
- মাইক্রোবায়োলজি
- সেল বায়োলজি
- ফার্মাকোগনোসি
- ফার্মাকোলজি
- ফার্মাসিটিক্যাল টেকনোলজি
- ফার্মাকো কাইনেটিক
- বায়োফার্মাকো কাইনেটিক
- ফার্মাসিটিক্যাল এনালাইসিস
- ফার্মাসিটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
- ফার্মাসিটিক্যাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স
- ফার্মাসিটিক্যাল কোয়ালিটি কন্ট্রোল
- ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেটিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট
- টক্সিকোলজি
- হসপিটাল এন্ড কমিউনিটি ফার্মেসী
- ম্যাথমেটিক্স এন্ড বায়ো স্ট্যাটিসটিকস
- কম্পিউটার ফান্ডামেন্টাল
- রিসার্চ মেথডোলজি
ফার্মেসী সাব্জেক্ট টা হলো ওষুধ নিয়ে পড়াশোনা ফার্মেসি স্বাস্থ্যবিজ্ঞ্যানের একটি বিশেষ শাখা যা মূলত
রসায়নের সাথে জীববিজ্ঞ্যানের একটি যোগসূত্র হিসাবে কাজ করে। মুলত ঔষধ ও কসমেটিকসের
প্রস্তুতি, ব্যবহার এদের নিরাপদ ও সঠিক বিতরণ ও পরিবেষণ(Dispensing) ইত্যাদি সবই এর আলোচ্য বিষয়। আধুনিক যুগের ফার্মাসিস্টদের কাজ হচ্ছে ঔষধ উৎপাদন ও সংরক্ষণ,ঔষধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য বিতরণ, এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, সঠিক
চিকিৎসাগত প্রয়োগ ইত্যাদি। অতঃপর একজন ফার্মাসিস্ট হলেন সেই বেক্তি যে এই সকল
বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
ফার্মেসী এর প্রধান শাখা গুলো হলো-
১- হসপিটালিটি /ক্লিনিকাল ফার্মেসী
২- ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ফার্মেসী
৩- কমিউনিটি ফার্মেসী
৫-নিউক্লিয়ার ফার্মেসী
৬- অনলাইন ফার্মেসী
৭- ভেটেরিনারি ফার্মেসী
উপরেরে ১ নং টা এদেশের ডাক্তার রা ব্লক করে রাখছে ২ নং টা পুরুদমে এদেশে চলছে ৬ নং টা হালকা- পাতলা চলে আর কি ৭ নং টা যারা ডিভিএম সম্পন্ন করেন তাদের জন্য উপরের লেখা থেকে যেটা বুঝা যায় সেটা হলো
আমাদের দেশের ফার্মাসিস্ট দের মূল কাজ হলো indrustry তে। আমাদের দেশে প্রায় ৩০০+ অনুমোদিত ওষুধ কোম্পানি আছে। যারা আমাদের দেশের চাহিদা মিটিয়েও দেশের বাইরে ওষুধ রপ্তানি করছে। মোট কথা এদেশ ওষুধ এ সয়ংসম্পূর্ণ। এসব কোম্পানির প্রোডাকশন, প্রোডাক্ট ম্যানেজম্যান্ট, প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট, কোয়ালিটি কন্ট্রোল, ট্রেনিংসহ বিভিন্ন বিভাগে গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষকতা, গবেষণা এবং দেশের বাইরে কাজ করার সুযোগ তো আছেই।
হসপিটালিটি ফার্মেসী নিয়ে কিছু ধারণা দেওয়া দরকার
ওষুধ এবং অন্যান্য চিকিৎসা আনুষাঙ্গিক সংগ্রহ, সংরক্ষন, প্রস্তুত এবং ওষুধের প্রয়োগ।
স্টক নিয়ন্ত্রণ, স্টোরেজ, অর্ডার দেয়া , লেবেল লাগানো এবং আর্থিক বাজেট স্থাপনের দায়িত্ব গ্রহণ এবং ডিসপেন্সারীর হিসাবরক্ষন।
ওষুধ সরবরাহ এবং ওষুধের প্রয়োগ যথাযথ ফর্ম নিয়ে আলোচনা করার জন্য রোগী, ডাক্তারএবং নার্সদের সাথে সাক্ষাৎ করা।
অনেকেরই ধারণা, ফার্মাসি পড়লে শুধু ওষুধশিল্পে কাজ করতে হয়। এর বাইরেও তাঁদের জন্য কাজের নানা ক্ষেত্র রয়েছে। ফার্মাসিস্টদের কাজ শুধু ওষুধ কোম্পানিগুলোতে নয়, ওটা তাঁদের কয়েকটি কাজের জায়গার মাত্র একটি। এর বাইরে তাঁদের সরকারি নানা দফতর, সরকারি- বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, কমিউনিটি ফার্মাসি, শিক্ষকতা, গবেষণাসহ অন্যান্য ক্ষেত্র। ফার্মাসিস্ট বা ওষুধ বিশেষজ্ঞ হলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি ফার্মেসি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং বিধিবদ্ধ সংস্থা বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল থেকে ফার্মেসি পেশা চর্চার জন্য নিবন্ধন পেয়েছেন। দেশের হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার,নার্সদের পাশাপাশি ফার্মাসিস্ট থাকার কথা থাকলেও স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও আমরা এ সংস্কৃতিটা চালু করতে পারিনি। উন্নত বিশ্বের স্বাস্থ্যসেবা সঠিকভাবে সম্পাদন করেন ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট ও নার্স। তাই স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এদেশের ফার্মেসি সেবার মান বাড়ানো অতীব জরুরি। তা না হলে স্বাস্থ্যসেবা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাবে না।
এ দেশের হাসপাতালগুলোতে ফার্মেসি সেবা বাজার থেকে ওষুধ সংগ্রহ করা এবং ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী রোগীর কাছে হস্তান্তর করা। এটা খুবই আনন্দদায়ক ও আশার বিষয় যে এদেশের বেসরকারি হাসপাতাল, যেমন স্কয়ার, ইউনাইটেড, অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই উন্নত মানের ফার্মেসি সেবা দানের জন্য ফার্মাসিস্ট নিয়োগ করছে।
কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়।
- ফার্মেসী শিক্ষার বিভিন্ন ডিগ্রী রয়েছে
১- ডি ফার্ম (ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসি)
২- বি ফার্ম ( ব্যাচেলর অব ফার্মেসী)
৩- ফার্ম ডি ( ডক্টর অব ফার্মেসী)
আমাদের দেশের অনেক গ্রাজুয়েট রাও মাঝে মাঝে ১ নং ও ২ নং কে মিক্স করে ফেলেন। যাইহোক আমি একটু এই ব্যাপারে কিছু ধারণা দেই-১ নং টা হলো ২ বছরের কোর্স এটা শেষ করলে ২ নং টা করতে পারবেন এবং তার পর -M.pharm PhD করতে পারবেন ৩ নং টা হলো ৫ বছরের কোর্স যেটা আপনি HSC পাশ করেই শুরু করতে পারবেন। আর এটা করলে আপনাকে ২ নং বা M.pharm করতে পারবেন না আর phD করারও দরকার নেই আপনি এমনিতেই নামের আগে Dr লিখতে পারবেন।
৩ নং টা হলো সারা World এ সমান ভাবে গ্রহন যোগ্য। আগে বি.ফার্ম করেই আমেরিকাতে যাওয়া যেত। এখানে আমেরিকার কথা বলছি কারণ ওইদেশে এদের প্রচুর ডিমান্ড। আগে তো সবাই একটা কথাই বলতো
ফার্মেসী পড়ো, আমেরিকাতে উড়ো.... কিন্তু এখন বি.ফার্ম করে আমেরিকাতে যাওয়া যায়না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমাদের দেশে এই ডিগ্রি টা এখনো চালু হয় নাই। ঢাবি, জাবি এবং এন এস ইউ এটা খুলতে চাইলেও ইউসিজি তাদের অনুমুদন দেয় নাই।এখন এইগুলাতে ৫ বছরের বি.ফার্ম প্রোফেশনাল নামের একটা আলাদা ক্লিনিকাল ফার্মেসী চালু আছে যা দিয়ে America তে NAPLEX. exam এ অংশগ্রহণ করা যায়।
এই দিক দিয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে..... প্রতি বছর ১৫০০+ গ্রাজুয়েট বের হয়.. সো ফার্মেসী পড়ার আগে অপেক্ষাকৃত ভালো ইউনিভার্সিটি ছাড়া না পড়াই ভালো।
১৯৯৭ সালে একবার পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে দেশের বড় ৬টি হাসপাতালে ’হসপিটাল ফার্মেসি’ চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের মধ্যে দ্বৈত প্রশাসন সৃষ্টি হবার ধুয়া তুলে তৎকালীন
কারো কারো বিরোধিতায় সেটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ
নেয়া হয়নি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মত ’হসপিটাল ফার্মেসী’ চালুর উদ্যোগ সফল হলে সার্বিক ওষুধ
শিল্প এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্যই মঙ্গলজনক হবে। বিশেষজ্ঞ ফার্মাসিস্টরা চিকিৎসার জন্য ওষুধ
ব্যবহার সংক্রান্ত জটিলতার।সমাধান, ওষুধের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার নজরদারি ও প্রতিরোধকরণে বিশেষ পারদর্শী। সর্বোপরি রোগীর চাহিদা অনুযায়ী ফার্মেসি সেবা প্রদ করতে হলে ফার্মাসিস্টের কোনো বিকল্প নেই। মোট কথা হলো এই সেক্টর টাই আমাদের দেশের ডাক্তাররা ব্লক করে রেখেছে।
আর আমাদের দেশে কয়েক বছর ধরে ফার্মাসিস্ট দের রেজিস্ট্রি পরীক্ষাই হচ্ছে না। আশা করি সরকার দ্রুত এই সমস্যা গুলোর সমাধান করার চেষ্টা করবেন।
তথ্য সূত্র: Department of Pharmacy,Jahangirnagar University